কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরে “অভিযোগকারীর” তথ্য ফাঁস করছেন ড্রাইভার!

নিজস্ব প্রতিবেদক •
অফিসের ডকুমেন্টস, অভিযোগের তথ্য, টেলিফোনে আড়ি পাতা, কারো ফোনালাপ পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড করে তা প্রকাশ করার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়।
শুধু ফোনালাপ নয়, টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেকের একান্ত ব্যক্তিগত অডিও-ভিডিওসহ নানা তথ্য প্রকাশের ঘটনা বাড়ছে। সংবিধান একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করার নিশ্চয়তা দিলেও সেটি উপেক্ষিতই থাকছে।
সম্প্রতি এবার তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের পরিবেশ অধিদপ্তরের ড্রাইভার রাউজানের বিরুদ্ধে। যার কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করে উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছেন অভিযোগকারীরা।
জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়ি চালক রাউজান দীর্ঘদিন ধরে কাজ করার সুবাধে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, পাহাড়, মাটি ও বালুখেকো সিন্ডিকেটের সাথে। তারই ফল হিসেবে পাহাড়, বালি, মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ করার সাথে সাথে খবর চলে যায় ঐসব সিন্ডিকেটের কাছে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হন, কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়ি চালক রাউজান।
অন্যদিকে পরিবেশ বাঁচাতে অধিদপ্তরের দারস্থ হয়ে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে অভিযোগ কারীরা৷ পাচ্ছেন না কাঙখিত সেবাও।
এদিকে মোহাম্মদ নুর নামের এক অভিযোগকারী পরিবেশ অধিদপ্তরের ড্রাইভার রাউজানের দিকে অভিযোগের তীর ছেড়ে দিয়ে বলেন, গতমাসে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০ এর ৬-খ বিধান লঙ্ঘন করে পাহাড় কর্তন এবং ধারা ৬-ঙ লঙ্ঘন করে ডোবাশ্রেণীর মজি ভরাটকারী পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম, মাহমুদ হক, আবু ছৈয়দ এর বিরুদ্ধে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযোগ করি।কিন্তু অভিযোগ জমা দিয়ে বাড়িতে ফিরতে না ফিরতেই খবর চলে আসে অভিযুক্তদের কাছে৷
তিনি আরও বলেন, পালংখালী এলাকার বিভিন্ন বালি, মাটি ও পাহাড়খেকো এবং অবৈধ ডাম্পার মালিকদের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে তার। যাদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নিয়ে অভিযানের তথ্য ফাঁস করেন এই ড্রাইভার। যার কারণে আমি এখন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যদি অভিযোগ করে তথ্য ফাঁস হয়ে যায় তবে অভিযোগ করে পরিবেশ কিভাবে বাঁচাবো।
অভিযোগের ভিত্তিতে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের ড্রাইভার রাউজানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে জানান, “এটা অফিস থেকেও জানাতে পারে তবে আমারও আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব থাকে এবং পরিচিত লোক থাকে এবং ভালো সম্পর্ক থাকলে তাদেরকে বলা হয়৷ যেটা সত্যি সেটা বলতেছি আপনার সাথে৷ পরে তিনি নিউজ না করার জন্য আকুতি মিনতি করেন এবং মাফ চান।”
এব্যাপারে অভিযুক্ত পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি পরিবেশের পক্ষে কথা বলাতে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি কুচক্রী মহল৷ এবিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি৷
বিষয়টি নিয়ে জানতে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালককে বারংবার ফোন করে কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলে মেসেজ সিন করে কোনো রিপ্লাই দেননি তিনি।